বাংলাদেশের একেক অঞ্চলে আছে একেক রকমের বিশেষ বিশেষ খাবার,যে খাবারগুলোর সঙ্গে এক হয়ে গেছে সেই অঞ্চলের নাম।যেমন কালাভুনা,মেজবানী মাংস নাম আসলেই সবার প্রথম মনে হয় চট্রগ্রাম এর কথা।সাদকরা গোস্ত এর সাথে জরিয়ে আছে সিলেটের নাম।তেমনি করে চুইঝাল দিয়ে গরুর মাংস রান্নার কথা উঠলেই খুলনার নাম চলে আসে।আবার মাংসের শাহী গ্লাসীর সাথে জড়িয়ে আছে পুরান ঢাকার নাম।তেমনি করে উত্তরাঞ্চলের বগুরার নামের সাথে জরিয়ে আছে মজলিস বা বিভিন্ন অনুষ্ঠানে রান্না হওয়া গরুর মাংস দিয়ে আলুর ঘাটির নাম,যা গরম ভাতের সাথে উত্তরবঙ্গের মানুষের কাছে অমৃত।
তাই কিছু অঞ্চলভিত্তিক ঐতিহ্যবাহী গরুর মাংসের রান্নায় সাজানো হয়েছে আজকের রেসিপি গুলো।তাহলে দেরি না করে চলুন দেখে নেই রেসিপি গুলো-
একনজরে যা যা থাকছে
৬ ধরণের ঐতিহ্যবাহী গরুর মাংসের রেসিপি
১/গরুর মাংসের কালা ভুনা
উপকরণ নং-১ঃ
- গরুর মাংস ২ কেজি (হার চর্বিসহ বড় টুকরো করে কাটা)
- পেঁয়াজ ১ কাপ (বড় কিউব করে কাটা)
- আদা বাটা ১ টেবিল চামচ
- রসুন বাটা ১ টেবিল চামচ
- কালো গোলমরিচ ১০/১২ টি
- লবঙ ৬/৭ টি
- কাবাব চিনি ৫/৬টা
- তেজপাতা ৩ টি(মাঝ দিয়ে ছিড়ে নেওয়া)
- কালো এলাচ ৩ টি
- সাদা এলাচ ৫/৬ টি
- দারুচিনি মাঝারি ৩/৪ টুকরো
- স্টার এনিস ৩/৪ টি
- পেয়াজ বেরেস্তা ১ কাপ
- ধনিয়া গুঁড়া ৩ চা চামচ
- শুকনো মরিচ গুঁড়া ২ টেবিল চামচ
- হলুদ গুঁড়া ১ চা চামচ
- লবন ১ টেবিল চামচ/পরিমাণমত
- সয়াবিন তেল ১ কাপ পরিমাণ।
উপকরণ নং-২ঃ
- গোল মরিচের গুঁড়ো আধা চা চামচ
- জয়ফল গুড়ি সামান্য(১ টা গুড়ো করে নেওয়া)
- জয়ত্রি ১/২ গ্রাম
- ভাজা জিরা গুঁড়ো আধা চা চামচ
- গরম মশলার গুড়ো আধা চা চামচ
- রাধুনি গুড়ো আধা চা চামচ।
উপকরণ নং-৩
- পেয়াজ কিউব করে কাটা আধা কাপ
- গরম মশলার গুড়া আধা চা চামচ
- রাধুনি গুড়া আধা চা চামচ।
ফোরনের উপকরণঃ
- পেয়াজ কুচি ১ কাপ
- শুকনা মরিচ ৮/৯ টা
- আস্ত রসুনের কোয়া ৬/৭ টা
- সরিষার তেল ১ কাপ।
প্রস্তুত প্রণালিঃ
#গরুর মাংস মাঝারি টুকরো করে কেটে ভাল করে ধুয়ে যে হাঁড়িতে রান্না করবেন তাতে রেখে দিন।
#এরপর ১ নং উপকরণ এর সব মশলা মাংসে দিয়ে ভাল করে মাখিয়ে নিন।যত ভাল করে মাখাবেন মাংসের মাঝে মশলা তত ভাল করে ঢুকবে।
#এবার মাংস ঢাকা দিয়ে চুলার হিট হাই রেখে রান্না করুন ৫ মিনিট।যখন দেখবেন মাংস থেকে পানি ছেড়ে দিচ্ছে তখন চুলার আঁচ মাঝারি আঁচে দিয়ে মাংস ভাল করে নেড়েচেড়ে দিয়ে ঢেকে রান্না করুন ১৫/২০ মিনিট।
মাঝারি আঁচে মাংস রান্না করলে এমনিতেই মাংস থেকে পানি বেরিয়ে আসে তাই আলাদা করে পানি দিতে হবেনা।শুধু মাঝেমধ্যে মাংস উল্টেপাল্টে নেড়েচেড়ে দিন যাতে নিচে না লেগে যায়।
#১৫/২০ মাঝারি আঁচে রান্না করার পর অল্প আঁচে এক/দেড় ঘন্টা ঢাকনা দিয়ে ঢেকে মাংস রান্না করুন।মাঝেমধ্যে ঢাকনা উঠিয়ে নেড়েচেড়ে দিন।নিচে যাতে না লেগে যায় সেদিকে খেয়াল রাখবেন।
#পানি একেবারে শুকিয়ে গেলে অল্প অল্প করে গরম পানি দিয়ে কষাতে থাকুন।একেবারে বেশি পানি দেয়া যাবেনা।
#এভাবে কষাতে কষাতে একসময় মাংসের রং কালচে হয়ে আসবে।মাংসের রং কালো হতে মিনিমাম দেড় ঘণ্টা সময় লাগবে।ন যেহেতু কালাভুনা সেহেতু সময় একটু বেশি লাগলেও মাংস কালো হওয়া পর্যন্ত রান্না করতেই হবে।
#পানি টেনে মাংসের উপরে তেল ভেসে উঠলে একে একে ২ নং উপকরণ এর মশলাগুলো দিয়ে খুব ভাল করে মিশিয়ে ২/৩ মিনিটের মত কষিয়ে ঢাকনা দিয়ে ঢেকে চুলা থেকে নামিয়ে রেখে দিন।
#এবার আরেকটি কড়াইয়ে সরিষার তেল গরম করে তাতে পেঁয়াজ দিয়ে দিন।পেয়াজের কালার কিছুটা পরিবর্তন হয়ে আসলে তাতে রসুন কুচি দিয়ে নাড়তে থাকুন।
#রসুন আর পেয়াজের কালার আরো কিছুটা পরিবর্তন হলে এতে আদা কুচি ও শুকনো মরিচ দিয়ে পেয়াজ রসুন ব্রাউন হয়ে আসলে এতে দুই/তিন চামচ মাংস তুলে দিয়ে সাথে সাথে ঢাকনা দিয়ে ঢেকে রাখুন এক মিনিট।
#এরপর তেল মশলা সহ সব উপকরণ কালাভুনার পাত্রে ঢেলে দিন।ঢালার পর চুলার আচ হাই থেকে মাঝারি করে দেবেন।
#এরপর ভাল করে নেড়েচেড়ে মিশিয়ে ঢাকা দিয়ে রেখে দিন ৪/৫ মিনিটের মত।এতে করে বাগারের ঘ্রান মাংসের সাথে খুব ভালভাবে মিশে যাবে।
#৪/৫ মিনিট পর ঢাকনা খুলে ৩ নং উপকরণ এর সব মশলা দিয়ে অনবরত নাড়তে থাকুন পেয়াজের কালার ব্রাউন হওয়া পর্যন্ত।আর ঢাকনা দেয়ার প্রয়োজন নেই।
#মাংস কালো হয়ে তেল ভেসে উঠলে কয়েকটা কাচা মরিচ দিয়ে কিছুক্ষণ নেড়েচেড়ে নামিয়ে সাজিয়ে পরিবেশন করুন চট্রগ্রামের ঐতিহ্যবাহী অথেনটিক বিফ কালাভুনা।
২/মেজবান মাংস
উপকরণ নং-১ঃ
- গরুর মাংস ২ কেজি
- পেঁয়াজ ১ কেজি (অর্ধেক বাটা, অর্ধেক কুচি)
- আদা বাটা ১০০ গ্রাম
- রসুন বাটা ১০০ গ্রাম
- সাদা সরিষা বাটা ২৫ গ্রাম
- চিনাবাদাম বাটা ২৫ গ্রাম
- নারকেল বাটা ১০০ গ্রাম
- ধনিয়া গুঁড়া ১ টেবিল চামচ
- জিরার গুঁড়া ১ টেবিল-চামচ
- মরিচ গুঁড়া ১ টেবিল-চামচ
- হলুদ গুঁড়া ১ টেবিল-চামচ
- গরমমসলা পরিমাণমতো
- টমেটো আধা কেজি
- সরিষার তেল ২৫০ গ্রাম
- ঘি ২৫০ গ্রাম
- কাঁচা মরিচ ৬টি
- লবণ স্বাদমতো।
উপকরণ নং-২ঃ
- জিরা ১০ গ্রাম
- ধনিয়া ৫ গ্রাম
- রাঁধুনি ১০ গ্রাম
- শুকনা মরিচ ৭ টি
- তেজপাতা ৫ টি।
সব ভেজে গুড়ো করে নিতে হবে।
উপকরণ নং-৩ঃ
- মুখ চেরা এলাচি ৪ টি
- দারুচিনি ৩ টি (২ ইঞ্চি)
- লবঙ্গ ৫ টি
- গোলমরিচ ১০/১২ টি
- মেথি ১ টেবিল-চামচ
- জায়ফল ছোট ১ টি
- জয়ত্রী আধা টেবিল চামচ
- রাঁধুনি ২ চা চামচ
- জোয়াইন আধা চা চামচ।
এই সব মশলা ভেজে গুড়ো করে নিতে হবে।
প্রস্তুত প্রণালিঃ
#মাংস ভাল করে ধুয়ে পানি ঝরিয়ে কাঁচা মরিচ ছাড়া ১ নম্বর উপকরণের সব মসলা ও ২০০ গ্রাম ঘি দিয়ে মাংস ভাল করে মেখে একটি ভারী সসপ্যানে নিয়ে চুলায় বসিয়ে দুই কাপ পানি দিয়ে নাড়তে থাকুন এবং কিছুক্ষণ পর ২ নম্বর উপকরণের মসলার গুড়ো মাংসে দিন।
#ঢাকনা দিয়ে চুলায় মাঝারি আঁচে রান্না করুন। মাঝেমধ্যে নেড়েচেড়ে দিন।
#পানি শুকিয়ে এলে সামান্য গরম পানি দিন,বেশি দেয়া যাবেনা।মাখা মাখা ঝোল রাখতে হবে।
#মাংস সেদ্ধ হয়ে উপরে তেল উঠে আসলে কাঁচা মরিচ এবং ৩ নম্বর উপকরণের সব গুঁড়া মসলা ও ৫০ গ্রাম ঘি দিয়ে নেড়েচেড়ে নামিয়ে গরম গরম পরিবেশন করুন চট্রগ্রামের ঐতিহ্যবাহী গরুর মেজবানী মাংস।
৩/গরুর মাংসের শাহী গ্লাসি
উপকরণ নং-১ঃ
- গরুর মাংস ২ কেজি
- পেঁয়াজবাটা আধা কাপ
- আদাবাটা ২ টেবিল চামচ
- কাচা মরিচ বাটা ২ টেবিল চামচ
- রসুনবাটা ২ চা চামচ
- ধনিয়াবাটা ২ চা চামচ
- জিরা বাটা ২ চা চামচ
- গরম মশলার গুড়া ১ চা চামচ
- সাদা গোল মরিচের গুঁড়ো ১ চা চামচ
- টক দই ১ কাপ
- মিষ্টি দই ২ টেবিল চামচ
- লবন পরিমাণ মত।
উপকরণ নং-২ঃ
- ঘি ১ কাপ
- এলাচ ৪/৫ টি
- দারুচিনি ৫/৬ টুকরা
- তেজপাতা ২/৩ টি
- পেয়াজ কুচি ১ কাপ।
উপকরণ নং-৩
- পোস্ত দানা ২ টেবিল চামচ
- দুধ ১ কাপ
- কাজু বাদাম ১০/১৫ টি
উপরের উপকরণ তিনটি ব্লেন্ড করে রেখে দিন।
- মাওয়া ২ টেবল চামচ।
- পেয়াজের বেরেস্তা আধা কাপ।
উপকরণ নং-৪ঃ
- কাচা মরিচ ১০/১২ টি
- পেঁয়াজ বেরেস্তা আধা কাপ
- জায়ফল জয়ত্রী গুঁড়া ১ চা চামচ
- গরম মসলা গুঁড়া ২ চা চামচ
- ঘি ১ টেবিল চামচ
- সিদ্ধ ডিম ৪/৫ টি
- গোলাপ জল বা কেওড়া জল ১ চা চামচ।
প্রস্তুত প্রনালীঃ
#গরুর মাংস বড় টুকরো করে কেটে ভাল করে ধুয়ে পাত্রে নিয়ে এক নং উপকরণ এর সব মশলা সহ মাংস ভালভাবে মেখে ম্যারিনেট করে রেখে দিন এক ঘন্টা।
#এবার একটি পাত্র চুলায় দিয়ে গরম করে তাতে দুই নং উপকরণ এ ঘি দিয়ে গরম করে এতে এলাচ,তেজপাতা ও দারুচিনি দিয়ে কিছুক্ষন নেড়েচেড়ে পেয়াজ দিয়ে হালকা ব্রাউন করে ভেজে নিন।
#এরপর মেরিনেট করা মাংস ঢেলে নেড়েচেড়ে দিন এবং মেরিনেশনের পাত্রে যে মশলা আটকে থাকবে তা অল্প পানি দিয়ে ধুয়ে মাংসে ঢেলে দিন।
#জ্বাল বাড়িয়ে রান্না করুন ৫ থেকে ১০ মিনিট এবং মাংস ভালো ভাবে কষিয়ে নিন।
#কষানো হয়ে গেলে ১ কাপ গরম পানি ঢেলে দিন এবং জ্বাল কমিয়ে ঢাকনা দিয়ে অল্প আঁচে ৩০/৪০ মিনিট রান্না করুন।মাঝে মাঝে নেড়ে দিন।
#মাংসের পানি কমে এলে তিন নং উপকরণ এর সব উপকরণ একে একে দিয়ে মাংসের সাথে ভালভাবে মিশিয়ে নিন।
#এবার আবারো আধা কাপ গরম পানি মিশিয়ে মাংস শেদ্ধ হওয়ার আগ পর্যন্ত অল্প আঁচে রান্না করুন।
#মাংস সিদ্ধ হয়ে গেলে চার নং উপকরণ এর সব উপকরণ একে একে দিয়ে ৫ মিনিট রান্না করুন।
#রান্না হয়ে গেলে চুলা থেকে নামিয়ে পরিবেশন করুন পুরান ঢাকার ঐতিহ্যবাহী বিফ গ্লাসি বা গরুর মাংসের গ্লাসি।
৪/চুইঝালে গরুর মাংস
উপকরণঃ
- হালকা চর্বিযুক্ত হারসহ মাংস ২ কেজি(বড় করে কাটা)
- রসুন কুচি ১ কাপ
- আদা বাটা ১ টেবিল চামচ
- পেঁয়াজ কুচি আধা কাপ
- হলুদ গুড়া ২ চা চামচ
- জিরার গুঁড়া ২ টেবিল চামচ
- শুকনো মরিচের গুঁড়া ২ টেবিল চামচ
- সাদা এলাচ ৪টি
- কালো এলাচ ২ টি
- দারুচিনি ২/৩ টুকরো
- লবঙ ৫/৬ টি
- গোলমরিচ ৪/৫ টি
- তেজপাতা ৩/৪টি
- সরিষার তেল ১ কাপ
- লবণ পরিমাণমতো
- চুই ঝাল ২৫০ গ্রাম/ইচ্ছামত।(পরিষ্কার করে মাঝ দিয়ে ফেরে নিন)
- ভাজা মসলা ১ টেবিল চামচ(ধনিয়া, জিরা, এলাচি ও দারুচিনি তাওয়ায় ভেজে গুরো করা)
প্রস্তুত প্রনালীঃ
#গরুর মাংস ভালোভাবে ধুয়ে এতে চুইঝাল ও ভাজা মসলা ছাড়া বাকি সব মসলা দিয়ে ভালভাবে মাখিয়ে চুলায় বসিয়ে দিয়ে হাই হিটে কিচ্ছুক্ষণ কষিয়ে নিন।
#কিছুক্ষণ মাংস ভালো করে কষানোর পর তেল উপরে উঠলে আধা লিটার গরম পানি দিয়ে আবার ২০ মিনিট কষিয়ে নিন।
#এরপর মাংস আধা সেদ্ধ হয়ে গেলে চুইঝাল দিয়ে ঢেকে রান্না করুন মাংস সেদ্ধ হওয়া পর্যন্ত।
#মাংস সেদ্ধ হয়ে ঝোল টেনে শুকনো শুকনো হয়ে আসলে ভাজা মসলা দিয়ে নামিয়ে পরিবেশন করুন খুলনার ঐতিহ্যবাহী চুইঝালে গরুর মাংস ভুনা।
৫/সাতকরা দিয়ে গরুর মাংস
উপকরণঃ
- গরুর মাংস ১ কেজি
- টক দই আধা কাপ
- পেঁয়াজ বাটা আধা কাপ
- রসুন বাটা ১ টেবিল চামচ
- আদা বাটা ১ টেবিল চামচ
- জিরা গুঁড়া ১ চা চামচ
- গরম মশলার গুড়া
- মরিচ গুঁড়া ২ চা চামচ
- সাতকরা অর্ধেক টা (ভেতরের রসালো অংশ ফেলে মাঝারি কিউব করে কাটা)
- লবণ পরিমাণমত
- ভাজা জিরার গুঁড়া ১ চা চামচ
- কাঁচা মরিচ পরিমাণমতো।
ফোড়নের জন্যঃ
- সরিষার তেল আধা কাপ
- সাদা এলাচ ২ টি
- কালো এলাচ ১ টি
- লবঙ ৩/৪ টি
- গোলমরিচ ৩/৪ টি
- তেজপাতা ২ টি।
প্রস্তুত প্রনালীঃ
#মাংস ভাল করে ধুয়ে পরিষ্কার করে পানি ঝড়িয়ে সাতকরা,ভাজা জিরার গুঁড়া ও কাঁচা মরিচ ছাড়া বাকি সব উপকরণ দিয়ে মেখে এক/দুই ঘণ্টা রেখে দিন।
#এরপর চুলায় মাঝারি আঁচে একটি পাত্রে তেল গরম করে তাতে ফোড়ন এর সব উপকরণ দিয়ে সামান্য ভেজে মাংস দিয়ে নেড়েচেড়ে ঢেকে রান্না করুন।যদি মাংস সিদ্ধ হওয়ার আগে পানি শুকিয়ে যায় তাহলে পরিমাণমতো গরম পানি দিয়ে ঢেকে জ্বাল দিন।
#মাংস প্রায় সেদ্ধ হয়ে এলে টুকরো করা সাতকরা ও কাচা মরিচ দিয়ে নেড়েচেড়ে অল্প আচে রান্না করুন সাতকরা সিদ্ধ হওয়া পর্যন্ত।
# সাতকরা ও মাংস পুরোপুরি সিদ্ধ হয়ে গেলে ভাজা জিরার গুঁড়া ছিটিয়ে নামিয়ে পরিবেশন করুন মজাদার ভিন্ন স্বাদের সিলেটের ঐতিহ্যবাহী সাতকরা গোসত।
৬/ গরুর মাংস দিয়ে আলু ঘন্ট/ঘাঁটি
উপকরণঃ
- বগুড়ার লাল আঠালো হাগড়াই আলু ১ কেজি।(না পেলে অন্য যেকোনো বড় আপু নিলেও হবে)
- হাড় সহ হালকা চর্বিযুক্ত গরুর মাংস ১ কেজি।
- পেঁয়াজ মাঝারি সাইজের ৬/৭ টি
- তেল ৪ টেবিল চামচ
- তেজপাতা ৩/৪ টি
- দারুচিনি মাঝারি সাইজের ৪/৫ টুকরো
- লবঙ্গ ৪/৫ টি
- গোলমরিচ ৪/৫ টি
- সাদা এলাচ ৩/৪ টি
- কালো এলাচ বড় ২ টি
- লবণ পরিমাণ মত
- আদা বাটা ২ টেবিল চামচ
- রসুন বাটা ২ টেবিল চামচ
- মরিচের গুঁড়া ২ টেবিল চামচ/ঝাল বুঝে
- হলুদের গুঁড়া ১ চা চামচ
- ধনে গুঁড়া ২ চা চামচ
- জিরা গুঁড়া ২ চা চামচ
- গোটা কাঁচা মরিচ ৭/৮ টি
- ভাজা জিরার গুঁড়া ১ টেবিল চামচ।
ফোড়নের উপকরণঃ
- তেল ২ টেবিল চামচ
- রসুন কুচি মাঝারি ১ টি
- পেঁয়াজ কুচি বড় সাইজের ২ টি
- পাঁচফোড়ন মশলা ১ চা চামচ।
প্রস্তুত প্রনালীঃ
# প্রথমে আলু সিদ্ধ করে খোসা ছাড়িয়ে আলু গুলোকে হাত দিয়ে চটকে নিন।বেশি মিহি করে পেস্ট করা যাবেনা,কিছু আলু আধা ভাঙা অবস্থায় রাখতে হবে।
#এরপর একটি পাত্রে তেল গরম করে তাতে তেজপাতা,দারুচিনি,লবঙ্গ,গোলমরিচ ও এলাচ দিয়ে হালকা ভেজে পেঁয়াজ কুচি দিয়ে বাদামী করে ভেজে নিন।
#পেঁয়াজ বাদামী হয়ে আসলে আদা বাটা ও রসুন বাটা দিয়ে আরেকটু ভেজে সামান্য পানি দিয়ে দিন।
#পানি দেয়ার পর স্বাদমতো লবণ, মরিচ,হলুদ,জিরা ও ধনিয়া গুঁড়া দিয়ে ভালো করে কষিয়ে নিন।
#মশলা কষানো হলে ধুয়ে রাখা গরুর মাংস গুলো ঢেলে দিয়ে ভালো করে মশলার সাথে মিশিয়ে ১০ মিনিটের মত নেড়েচেড়ে মাংস কষিয়ে নিন।
# কষানো হয়ে গেলে পরিমাণ মত পানি দিয়ে ঢাকা দিয়ে মাংস মোটামুটি সিদ্ধ করে নিন।
#মাংস প্রায় সিদ্ধ হয়ে এলে চটকে রাখা আলু গুলো ঢেলে দিয়ে মাংসের সাথে ভালো করে নেড়েচেড়ে ৭/৮ মিনিট কষিয়ে নিন।
#এরপর ৫ কাপ পানি ও গোটা কাঁচা মরিচ গুলো দিয়ে ১০ মিনিটের মত জ্বাল দিয়ে চুলা থেকে নামিয়ে নিন।নামানোর আগে ভাজা জিরার গুঁড়া ছিটিয়ে দিন।
#এরপর অন্য একটি পাত্রে তেল গরম করে পেঁয়াজ ও রসুন কুচি দিয়ে বাদামী করে ভেজে পাচঁফোরন মশলা দিয়ে হালকা ভেজে রান্না করে রাখা আলু ঘাটির পাত্রে ঢেলে দিয়ে ঢাকা দিয়ে রেখে দিন ৫/৬ মিনিট।
#পরিবেশন এর আগে ভাল করে নেড়েচেড়ে বাটিতে তুলে উপরে পেঁয়াজ বেরেস্তা ছড়িয়ে সাজিয়ে নিন এবং গরম গরম ভাতের সাথে পরিবেশন করুন উত্তরবঙ্গ/বগুড়ার ঐতিহ্যবাহী আলু গোস্তের ঘাটি বা ঘন্ট।
আজ এই পর্যন্তই।পরবর্তীতে আবার নতুন কোন রেসিপি নিয়ে চলে আসবো।আর হ্যা কেউ মাংস বাড়িয়ে বা কমিয়ে রান্না করতে চাইলে অবশ্যই সব উপকরণ এর পরিমান বাড়িয়ে বা কমিয়ে নেবেন।